জামালপুর জেলার ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রতিষ্ঠা করা হয়। গেজেট বিঞ্জপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর একই সালের ০৩ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কার্যক্রম শুরু হয়। এ উপজেলার উত্তরে কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলা, দক্ষিণে ইসলামপুর উপজেলা, পূর্বে বকশীগঞ্জ উপজেলা ও ভারতের মেঘালয় রাজ্য, পশ্চিমে গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলা। ঐতিহাসিক ঘটনাবলী হতে জানা যায়, মোগল আমলে দেওয়ান শাহজালাল এবং দেওয়ান শাহজামাল নামীয় দুই জন সাধক এ অঞ্চলে ধর্ম প্রচার করেন। তাঁদের নামানুসারে এ অঞ্চলের নামকরণ করা হয় দেওয়ানগঞ্জ।
ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী বিধৌত একটি প্রাচীন জনপদের নাম দেওয়ানগঞ্জ। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার শাখা নদী ও খাল-বিল বহুল এই এলাকা নদীভাঙ্গন ও বন্যাপ্রবণ। দেওয়ানগঞ্জ নামটি কীভাবে হয়েছে সে ব্যাপারে কোন প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া যায় না। তবে এ ব্যাপারে লোকশ্রুতি প্রচলিত আছে। ঐতিহাসিক ঘটনাবলী থেকে জানা যায় ব্রিটিশদের আগমনের আগে দেওয়ান শাহ্ জামাল ও দেওয়ান শাহ্ জালাল নামে দুইজন সাধক এ অঞ্চলে এসে ধর্ম প্রচার করেন। তাদের নামানুসারেই এ অঞ্চলের নামকরণ দেওয়ানগঞ্জ হয়েছে বলে মনে করা হয়।
ব্রিটিশ আমলে দেওয়ানগঞ্জ পাতিলাদহ পরগণার অন্তর্ভুক্ত ছিল। পশ্চিম ময়মনসিংহ ও রংপুর জেলা পাতিলাদহ পরগণা গঠিত হয়েছিল। তখন এই পরগণার রাজস্ব রংপুর কালেক্টরে প্রদান করা হতো। পাতিলাদহ পরগণার জমিদার ছিলেন মহারাজা প্রদ্যুতকুমার ঠাকুর। সেসময় তার নামানুসারে এই অঞ্চলকে প্রদ্যুতনগর বলা হতো। ১৮৯৯ সালে দেওয়ানগঞ্জে রেলস্টেশন স্থাপিত হলে রেলস্টেশনের নামকরণ করা হয় প্রদ্যুতনগর রেলস্টেশন। তবে পরবর্তীতে প্রদ্যুতনগর নামটি স্থায়ীত্ব পায়নি। ফলে প্রদ্যুতনগর রেলস্টেশনের নামটিও পরিবর্তীত হেয় দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন হয়েছে।
১৮৬৬ সাল পর্যন্ত দেওয়ানগঞ্জ বগুড়া জেলার অধীনে ছিল। ঐ বছর বগুড়া জেলা থেকে দেওয়ানগঞ্জকে ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর মহকুমার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৮৭৪ সালে জামালপুর মহকুমার অধীনে দেওয়ানগঞ্জ থানা গঠিত হয়। এর প্রায় সোয়াশ বছর পর ৩রা নভেম্বর ১৯৮৩ সালে দেওয়ানগঞ্জকে উপজেলায় রূপান্তরিত করা হয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ২৬ এপ্রিল পাকিস্তান বাহিনী দেওয়ানগঞ্জে প্রবেশ করে। ৫ ডিসেম্বর দেওয়ানগঞ্জ হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৯৯ সালে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS